বাঘু সিরিজ

            বিচ্ছিরি গরম পড়েছে! একেবারে বাঘিপিসী-মার্কা! বাঘুর অন্ততঃ তাই-ই মনে হচ্ছে! বাঘিপিসী যেমন সব সময় ফুটছে তো ফুটছেই, কিসে যে উনি খুশি হবেন বোঝাই দায়- আগুন ঝরিয়ে যাচ্ছেন তো ঝরিয়েই যাচ্ছেন! আকাশের সূর্যস্যারও হয়েছেন তেমনই, মাথা গরম করে বসে আছেন তো বসেই আছেন! সেই সন্ধেবেলা হলে তাঁর নাকে তেল …

  শীতটা এবারে কেমন যেন ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়েছে! অন্যান্য বছর কার্তিক মাস পেরোতে না পেরোতেই লেপ কম্বল দেদারসে গায়ে চাপিয়ে হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে শীত বাহাদুর এসে হাজির হন! আর এবারে? তিনি যে কোনখানে নাকে ঠেসে সরষের তেল দিয়ে চেপে ঘুমোচ্ছেন, বোঝাই দায়!তা শীত বাছাধন ঘুমের ঘোরে নাক ডাকুন …

            ধুস! ধুস! ধুস! ‘দূর ছাতা’ বলে যেদিকে দুচোখ যায়, সেদিকে বেরিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে বাঘুর!           এইরকম একঘেয়ে দিন কাটানো- এটা আবার একটা জীবন নাকি? রোজ সেই একঘেয়ে ক্লাস করা, দিদিমণির কাছে সেই একঘেয়ে বকুনি! এমনকি নিজের বদমায়েশিগুলো পর্যন্ত আজকাল তার নিজেরই একঘেয়ে ঠেকছে! অনেকদিন জবরদস্ত কোনকিছু ঘটছেও …

            পাঠশালায় আসছিল শিয়ালনি। আজ দেরিই হয়েছে কিছুটা। কাল সন্ধেবেলা খরগোশাই ডাক্তারদিদির বাড়ি নিমন্ত্রণ ছিল। জম্পেশ খাওয়াদাওয়া। সেসব সেরে বাড়ি ফিরে ঘুমোতেও দেরি হয়েছে। ফলে সকালে উঠতেও যেমন দেরি, তেমনি একের পর এক সব কাজেই। আর এত তাড়াহুড়োতে সকালবেলায় দাঁত মাজার ফাঁকে টুথপেস্ট অবধি খেতে ভুলে গেছে শিয়ালনি!           …

(শিয়ালনীর পাঠশালায় প্রচুর মজাদার ব্যাপার স্যাপার চলে, যার প্রথম হদিশটা  তোমাদের দিযছিলাম ‘বাগে এলো বাঘু’ গল্পে। গাছপালার ফাঁকফোকর দিয়ে পাঠশালার খবর লুকিয়েচুরিয়ে চলে আসে মাঝেসাঝেই। সেসব খবরটবর পেলেই ঝপাং করে তোমাদের জানিয়ে দি। পাঠশালাটা কোথায় জানো? বনের ঠিক সেই জায়গায়, যেখানে প্রচুর গাছপালা মিলে মাথার উপরে একটা চাঁদোয়ার মত বানিয়েছে, …

  পিঠে থলে ঝুলিয়ে বাঘু চলেছে পাঠশালার পানে। মনে বেশ খুশি খুশি ভাব। একটা গাছের ডালকে লাঠির মতন বানিয়ে নিয়েছে আর ভুলভাল গান ভাঁজতে ভাঁজতে হাতের ডালটা সপাং সপাং এদিক ওদিক চালাচ্ছে। রাস্তার যত ধুলো পাউডারের মতন গায়ে লেপা হয়ে অপরূপ খোলতাই চেহারা হয়েছে বাঘুর, কিন্তু তার সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই! …

(শিয়ালনীর পাঠশালায় প্রচুর মজাদার ব্যাপার স্যাপার চলে, যার প্রথম হদিশটা দিয়েছিলাম ‘বাগে এলো বাঘু’ গল্পে। গাছপালার ফাঁকফোকর দিয়ে পাঠশালার খবর ভেসে আসে মাঝেসাঝেই। পাঠশালাটা কোথায় জানো? বনের ঠিক সেই জায়গায়, যেখানে প্রচুর গাছপালা মিলে মাথার উপরে একটা চাঁদোয়ার মত বানিয়েছে, আর দুটো সেগুনগাছের ইয়া মোটা মোটা গুঁড়ি দুদিক থেকে এসে …

              গতকালের আগুনঝরা গরমটা আজ অনেকখানি নরম। দুপুরবেলাতেই দমকা কালবৈশাখী এসেছিল আকাশ কালো করে। তার সঙ্গে  পাল্লা দিয়ে তুমুল বৃষ্টি। আকাশের সেই রাগী সূর্যস্যার তো ভয়েই কোথায় লুকিয়ে পড়লেন সঙ্গে সঙ্গে। বাতাসের আওয়াজ তো নয়, যেন সমুদ্রের গর্জন। গাছপালাদের মাথারা সমানে দুলছে এপাশ ওপাশ- যেন সেই সমুদ্রের ঢেউ। …

    প্রার্থনার পর ক্লাসে ঢুকেই চশমাটা নাকের ডগায় নামিয়ে আনল শিয়ালনী, “মনে আছে তো, আজ ‘ভূগোল ভাবনা’ পড়াবো বলেছিলাম?”           বাঘু পাশে বসা ভালকিকে ফিসফিস করে বলল, “ভারি ভাবনায় পড়া গেল!”           ভালকি পাত্তা দিল না। পাত্তা দিলেই বাঘু আরও ভুলভাল বকতে থাকবে! ওদিকে দিদিমণি বই খুলে পড়াতে শুরু …

            বাঘু বেচারির কী দুর্দশাই না গেল গত কয়েকদিনে! দোল মিটতে না মিটতেই বাঘিপিসী এসে হাজির। সঙ্গে আবার বাঘনি! তার উপরে, বাঘিপিসী দিদিমণির সঙ্গে কথা বলে বাঘনিকে পাঠিয়েও দিচ্ছিল পাঠশালায়! আহা! বাঘু যেন বোঝে না কিছু? আসল মতলব তো বাঘুর ওপর নজরদারি করা! আর বাঘনিটারও বলিহারি! রোজ সন্ধেবেলা গুনে …